মোহাম্মদ শাহাব উদ্দীন, মহেশখালী:

মহেশখালীর মাতারবাড়িতে পানিবন্দি ৯৫০ পরিবারেরকে জরুরি সহায়তার অংশ হিসাবে ৫৩ লক্ষ টাকা দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) বিকেল ৪ টায় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় প্রাঙ্গণে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের নারীদের মাঝে সহায়তার চেক বিতরণ করা হয়।

স্টার্ড ফান্ড এবং ইউকে-এইড এর সহযোগিতায় একশনএইড বাংলাদেশ এবং ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল একশন (ইপসা) বাস্তবায়নে সহযোগিতা কর্মসূচির আওতায় মাতারবাড়ি ইউনিয়নের ৯ টি ওয়ার্ডের ৯৫০ পরিবারকে ৫ হাজার ৫ শ টাকা করে মোট ৫২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা ব্যাংক চেকের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে।

মাতারবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ’র সভাপত্বিত্বে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল কালাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির, ইপসার প্রধান নির্বাহী মো. আরিফুর রহমান, একশনএইডের উপ পরিচালক আবদুল আলীম, একশনএইড বাংলাদেশের ম্যানেজার শমশের আলী, ইপসার পরিচালক (অর্থ) পলাশ চৌধুরী, ইসপার উপ-পরিচালক মিস. নাসিম বানু শ্যামলী, ইসপার সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, দুস্থ মানুষ ও তাদের অধিকার রক্ষা করা প্রতিটি সুনাগরিকের কর্তব্য। জলাবদ্ধতার কারণে এখানে বিশুদ্ধ পানি, নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থায় ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পানিবাহিত রোগসহ বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এসব মানুষকে দ্রুত পুনঃবার্সনের ব্যবস্থা করতে হবে। অধিকার বঞ্চিত এসব মানুষের জন্য এই জরুরি সহায়তা কার্যক্রম। এই সহায়তার মাধ্যমে তারা তাদের অতি প্রয়োজনীয় জরুরি চাহিদাগুলো পূরণ করতে পারবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ও মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হবে। প্রকল্পের কারণে সৃষ্টি হওয়া জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রশাসন কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাড়ানোর জন্য একশনএইড ও ইপসাকে ধন্যবাদ জানান।

মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় পানি অপসারণের সুইচ গেটগুলো দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে গত ৫ মাস ধরে এই এলাকার প্রায় ১৫ হাজারের অধিক মানুষ পানিবন্দি জীবন-যাপন করছেন। জলাবদ্ধতার কারণে তাদের দৈনন্দিন স্বাভাবিক জীবন-যাপন ব্যাহত হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।

এই প্রকল্পের ব্যবস্থাপক ইপসার কর্মকর্তা এম. আজিজুল হক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই মাতার বাড়ির মানুষ জলাবদ্ধ অবস্থায় ছিল। কিন্তু কোন ব্যক্তি বা সংস্থার পক্ষ থেকে কোন ধরনের সহায়তা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়নি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এখানে কাজ করছি। মানুষের জলাবদ্ধ অসহায় জীবন-যাপন সম্পর্কে আমরা একশনএইডকে অবহিত করি এবং তাদের পক্ষ থেকে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ করা হয়। এরপর কমিউনিটির সঙ্গে পরামর্শ, জরিপ ও ইউনিয়ন পরিষদের সঙ্গে পরামর্শ করে অপেক্ষাকৃত বেশি ক্ষতিগ্রস্থ নারীদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। ক্রমান্বয়ে তাদেরও সহায়তা দেওয়া হবে।

সহায়তা পাওয়া ওয়াপদাপাড়ার বাসিন্দা খুরশিদা বেগম বলেন, পানির কারণে আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। স্বাভাবিক চলাচলে খুব অসুবিধা হয়। কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াটা অসম্ভব বিষয়। আমরা এই অবস্থা থেকে মুক্তি চাই।